পর্দাশীল নারী হিসেবে বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা ও করণীয়

 
বর্তমান যুগ হিসেবে একজন নারীর জন্য ঈমান ও পর্দার গুরুত্ব অনেক । ইসলাম নারীদেরকে দিয়েছে সম্মান মর্যাদা ও নিরাপত্তা । একজন নারী যদি ইসলামের আদর্শ মেনে জীবন পরিচালনা করে এবং বিশেষ করে পর্দা অবলম্বন করে, তবে তিনি সমাজে একটি আলাদা সম্মান অর্জন করে থাকেন, এবং তিনি নিজ জীবনের শান্তি অনুভব করেন।

সূচিপত্রঃ

পর্দা কি এবং কেন?

ইসলামে পর্দা মানে শুধু শারীরিক আবরণ নয়; বরং এটি একটি জীবন ব্যবস্থা। অনেকেই ধারণা করে থাকেন , যে পর্দা করা মানে ঘরে বন্দি থাকা। তবে এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। কেননা আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেছেনঃ যে হে নবী আপনি মুসলিম নারীদের বলে দিন তারা যেন তাদের ওপর তাদের চাদরের কিছু অংশ বুলিয়ে দেয় । এতে তাদেরকে চেনা যাবে এবং তারা উন্মুক্ত হবে না। কেননা এতে তাদেরকে পুরুষদের কু নজর থেকে বাঁচাবে।

পর্দাশীল নারীর আত্মপরিচয়ঃ

পর্দা নারীদের একটি পরিচিত প্রতীক এবং তাদের সম্মানের রক্ষাকবচ। একজন পর্দাশীল নারী তার পোশাকের মাধ্যমেই একটা আলাদা পরিচয় বহন করে থাকে। একজন মুসলিম নারী হিসেবে যে তার সৌন্দর্য পর্দার মাধ্যমে লুকিয়ে রাখে সে আল্লাহর নির্দেশ পালন করে থাকেন। পর্দা নারীকে সমাজের কু প্রতারণা থেকে বাঁচিয়ে রাখে এবং নিজেকে একজন সম্মানিত নারী হিসেবে পরিণত করেন।

পর্দা এবং আত্মবিশ্বাসঃ

পর্দা এবং আত্মবিশ্বাসের মধ্যে একটি জটিল সম্পর্ক বিদ্যমান পর্দা যা সাধারণত শরীরের একটি অংশ ঢেকে রাখার জন্য ব্যবহৃত হয় এটি বিভিন্ন সংস্কৃতি এবং ধর্মের মানুষের জন্য বিভিন্ন অর্থ গ্রহণ করে কিছু মানুষের জন্য পর্দা আত্মবিশ্বাসের একটি অংশ হতে পারে আবার কারো কারো জন্য এটি আত্মবিশ্বাসের পথে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। আত্মবিশ্বাস হলো নিজের উপর আস্থা রাখা এবং নিজের ক্ষমতা ও যোগ্যতাকে স্বীকৃতি দেওয়া।

সমাজে পর্দাশীল নারীর চ্যালেঞ্জঃ

আজকের আধুনিক বিশ্ব সমাজে এসোও একজন পর্দাশীল নারীকে বিভিন্ন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। পর্দাশীল নারীকে সমাজের কিছু নির্দিষ্ট চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয় যা তাদের ব্যক্তিগত সামাজিক এবং পেশাগত জীবনে প্রভাব ফেলে ।এই চ্যালেঞ্জ গুলোর মধ্যে রয়েছে বৈষম্য সীমাবদ্ধতা কোন কুসংস্কার এবং সামাজিক  স্টিগমা।
যেমনঃ
  • তুমি পর্দা কেন কর?
  • পর্দা করে চললে কি তুমি কাজ করতে পারবে?
  • পর্দা করে চললে তো জীবন বন্দী হয়ে যাবে?

কর্মক্ষেত্রে পর্দাশীল নারীর ভূমিকাঃ

পর্দা করা মানে ঘরে বন্দি থাকা নয়। বর্তমানে অনেক মেয়েরাই পর্দা করে অফিস আদালতে কাজ করে যাচ্ছে। অনেক প্ল্যাটফর্মেও কিন্তু মেয়েরা পর্দা করে পুরুষদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। পর্দা করা নারীদের জন্য জায়েয। এবং তা ইসলামের দৃষ্টিতে বৈধ ও সম্মানজনক।

বিশেষ করে ফ্রিল্যান্সিং, অনলাইন ব্যবসা , কনটেন্টরাইটিং, অনলাইন টিউটোরিং ইত্যাদি, এসব ক্ষেত্রে যেখানে ঘরে বসেই একজন পর্দাশীল নারী হালাল উপার্জন করে থাকেন।

সফল পর্দাশীল নারীদের বাস্তব উদাহরণঃ

পর্দাশীল নারী বলতে সাধারণত এমন মহিলাদের বোঝানো হয় যারা শক্তিশালী স্বাধীন এবং আত্মবিশ্বাসী এই শব্দটি কোন নির্দিষ্ট নারীর বাস্তব উদাহরণ নয় যেমনঃ

  • ইউটিউবার/ ব্লগারঃ যারা ইসলামিক কনটেন্ট তৈরি করে হাজারো পর্দাশীল নারীর অনুপ্রেরণা হয়েছেন।
  • ডাক্তার/ ইঞ্জিনিয়ারঃ যারা নিজ নিজ পেশাগত দায়িত্ব পালন করে ও পর্দা বজায় রেখে কাজ করে চলেছেন।
  • পরিবারের ভূমিকাঃ

    পর্দাশীল নারী পরিবারের ভূমিকা ও গুরুত্বপূর্ণ একটি পরিবারের নারীর পর্দা পালন তার ব্যক্তিগত জীবন পারিবারিক জীবন এবং সামাজিক জীবনের ইতিবাচক প্রভাব ফেলে ।পর্দা নারীর সম্মান ও মর্যাদা রক্ষা করে এবং পরিবারের সদস্যদের মধ্যেও পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও আত্মমর্যাদা সম্পর্ক তৈরিতে সহায়ক।

    ইসলামের পরিপূর্ণতা নারীর স্বাধীনতায়ঃ

    ইসলাম নারীর ওপর পর্দা ফরজ করেছে কিন্তু কখনোই তার স্বাধীনতা হরণ করেনি। বরং পর্দার মাধ্যমে নারীর সম্মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। সমাজে বিভিন্ন ধর্ষণ, শ্লীলতাহানির মতো ঘটনা থেকে নারীকে রক্ষা করার জন্যই পর্দা একটি কার্যকর ব্যবস্থা।

    উপসংহারঃ

    পর্দা কোন প্রতিবন্ধকতা নয় বরং এটি পর্দাশীল নারীর জন্য আত্মার সম্মান ও আর্তো মর্যাদার প্রতীক। একজন পর্দাশীল নারীকে মহান আল্লাহ তায়ালা পছন্দ করেন, এবং তিনি সমাজের চোখেও সম্মানীয় হতে পারেন। তাই আমাদের উচিত পর্দাশীলনারীদের উৎসাহ দেওয়া এবং তাদের সঠিক মর্যাদা দেয়া।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনার মূল্যবান মতামত এখানে টাইপ করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url