ঘরোয়া উপায়ে অর্গানিক হেয়ার অয়েলের উপকারিতা

ঘরোয়া উপায়ে অর্গানিক হেয়ার অয়েলের উপকারিতা চুল আমাদের সৌন্দর্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ, আর তাই এর যত্ন নেওয়া দরকার প্রাকৃতিক উপায়ে। বাজারে নানারকম তেল থাকলেও ঘরোয়া অর্গানিক হেয়ার অয়েল সবসময় নিরাপদ ও কার্যকর।

ঘরোয়া-উপায়ে-অর্গানিক-হেয়ার-অয়েলের-উপকারিতা
এই তেল চুল পড়া রোধ থেকে শুরু করে চুলের গোড়া মজবুত করতে অসাধারণ ভূমিকা রাখে। প্রাকৃতিক উপাদানের তৈরি হওয়ায়, এতে থাকে কোন ক্ষতিকর রাসায়নিকের প্রভাব নেই। নিয়মিত ব্যবহার করলে চুল হয় ঘন নরম ও ঝলমলে। তাই আজই জেনে নিন ঘরোয়া উপায়ে অর্গানিক হেয়ার অয়েলের অসাধারণ উপকারিতা।

সূচিপত্রঃঘরোয়া উপায়ে অর্গানিক হেয়ার অয়েলের উপকারিতা

ঘরোয়া উপায়ে অর্গানিক হেয়ার অয়েলের উপকারিতা

চুল আমাদের ব্যক্তিত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, আর সেই চুলের সঠিক যত্ন নিতে হলে প্রয়োজন প্রাকৃতিক পদ্ধতি। ঘরোয়া উপায়ে তৈরি অর্গানিক হেয়ার অয়েল শুধু চুলের সৌন্দর্য বাড়ায় না, বরং ভেতর থেকে পুষ্টি যোগায়। এতে কোন রাসায়নিক উপাদান না থাকায় চুলে কোন ক্ষতি হয় না, বরং দীর্ঘ মেয়াদে চুলকে করে আরো শক্তিশালী ও স্বাস্থ্যকর। নারিকেল, আমন্ড, অলিভ ও ক্যাস্টর অয়েল একসাথে মিশিয়ে তৈরি করা যায় ঘরোয়া অর্গানিক তেল, যা মাথার ত্বকের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে এবং চুলের গোড়া মজবুত করে।

এই তেলে থাকা ভিটামিন ই ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চুল পড়ার রোধ করে ও নতুন চুল গজাতে সহায়তা করে। অনেকেই বলেন, একবার অর্গানিক তেলের অভ্যাস গড়ে তুললে কেমিক্যাল তেলের দিকে আর ফিরে যেতে ইচ্ছা করে না। নিয়মিত ব্যবহার করলে চুলের খুশকি দূর হয়, চুলের আগা ফাটা কমে এবং চুল হয় নরম, মসৃণ ও ঝলমলে। ঘরোয়া অর্গানিক তেলের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল, এটি সবার জন্য উপযোগী শুষ্ক, তৈলাক্ত বা স্বাভাবিক যে কোন ধরনের চুলেই সমান ভাবে কাজ করে। 

এতে থাকা প্রাকৃতিক ফ্যাটি এসিড স্ক্যাল্পে আর্দ্রতা বজায় রাখে, ফলে চুলের রুক্ষতা দূর হয়। সপ্তাহে দুইবার তেল ব্যবহার করে রাতে রেখে দিলে সকালে চুল ধোয়ার পর পার্থক্যটা চোখে পড়বে। এই তেল কন্ডিশনার এর কাজও করে, ফলে অতিরিক্ত পণ্য ব্যবহারের দরকার পড়ে না। বাজারের কেমিক্যাল তেলের তুলনায় ঘরোয়া অর্গানিক তেল অনেক বেশি নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী। এতে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই, বরং এটি চুলকে প্রাকৃতিকভাবে সুস্থ রাখে।
 প্রাকৃতিক উপাদান যেমনঃ
  • সাধারণ নারিকেল তেল
  •  অলিভ
  • আমন্ড
  • ক্যাস্টর
  •  মেথিবীজ
  • অ্যালোভেরা
  • লেবুর রস
  • পেঁয়াজের রস
  •  কালোজিরা তেল
  • ভৃঙ্গরাজ পাতা
  • রোজমেরি অয়েল
  • কারি পাতা
  • আমলকি
এগুলো মিশিয়ে নিলে উপকারিতা আরো বেড়ে যায়, চুলের পুষ্টি বাড়ানোর পাশাপাশি চুলের রং কে উজ্জ্বল রাখে। যারা চুল পড়া, খুশী বা রক্ষতার সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য এই তেল হতে পারে এক আশ্চর্য সমাধান। ঘরোয়া অর্গানিক তেল শুধু চুল নয়, মাথার ত্বক কেউ আরাম দেয় এবং মানসিক প্রশান্তি এনে দেয়।সত্যি বলতে এই প্রাকৃতিক যত্নই চুলের আসল সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনে। তাই বাজারের রঙিন বোতল নয়, নিজের হাতে তৈরি প্রাকৃতিক অর্গানিক তেলি হতে পারে চুলের সেরা বন্ধু। নিয়মিত যত্ন ও একটু ধৈর্য রাখলে চুল হয়ে উঠবে আরো ঘন উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত।

ঘরোয়া অর্গানিক হেয়ার অয়েল কি

ঘরোয়া অর্গানিক হেয়ার অয়েল হলো এমন একটি প্রাকৃতিক তেল, যা সম্পূর্ণ রাসায়নিক মুক্ত এবং ঘরের উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয়।ঘরোয়া উপায়ে অর্গানিক হেয়ার অয়েলের উপকারিতা এই তেল সাধারণ নারিকেল, অলিভ, আমন্ড, ক্যাস্টর, বা কালোজিরা তেলের মতো প্রাকৃতিক উপাদান মিশিয়ে বানানো হয়। এতে কোন প্রিজারভেটিভ বা কৃত্রিম ঘ্রাণ থাকে না, ফলে এটি চুল ও মাথার ত্বকের জন্য একদম নিরাপদ। অর্গানিক তেল মূলত স্ক্যাল্পে পুষ্টি যোগায়, চুলের গোড়া মজবুত করে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। যারা চুল পড়া, খুশি বা রুক্ষতার সমস্যায় ভোগেন, তাদের জন্য এটি এক অসাধারণ সমাধান।

এয়ারটেল ব্যবহারে চুলের ভেতর পর্যন্ত আর্দ্রতা পৌঁছে যায়, ফলে চুল হয় নরম ও উজ্জ্বল। অর্গানিক হেয়ার অয়েলে থাকা ভিটামিন ই ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে। ঘরোয়া পদ্ধতিতে বানানো এটেল এ কোন ক্ষতিকর রাসায়নিক না থাকায় এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। বাজারের কেমিক্যালযুক্ত তেলের তুলনায় এটি অনেক বেশি নিরাপদ ও কার্যকর। সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার এই তেল ব্যবহার করলে চুলের গোড়া মজবুত হয় এবং চুল পড়া অনেকটাই কমে যাই।

সবচেয়ে ভালো দিক হলো, ঘরে তৈরি অর্গানিক তেল আপনি নিজের চুলের ধরন অনুযায়ী তৈরি করতে পারেন। কারো চুল শুষ্ক হলে বেশি নারিকেল তেল, আর তৈলাক্ত হলে হালকা অলিভ বা আমন্ড তেল ব্যবহার করা যায়। এমনকি এতে অ্যালোভেরা, লেবুর রস বা পেঁয়াজের রস মিশিয়ে নিলে আরো বাড়ে এর কার্যকারিতা। এই তেল শুধু চুলের সৌন্দর্যই নয়, মাথার ত্বক কেউ করে সতেজ ও স্বাস্থ্যকর। সত্যিকারের চুলের যত্ন নিতে চাইলে ঘরোয়া অর্গানিক হেয়ার অয়েলই হতে পারে তোমার চুলের সবচেয়ে বিশ্বস্ত সঙ্গী।

চুল পড়া রোধে অর্গানিক তেলের ভূমিকা

চুল পড়া আজকের দিনে খুব সাধারণ একটি সমস্যা, বিশেষ করে দূষণ, মানসিক চাপ ও পুষ্টিহীন তার কারণে এটি আরো বেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু ঘরোয়া অর্গানিক হেয়ার অয়েল হতে পারে এই সমস্যা প্রাকৃতিক সমাধান। এই তেলে থাকা ভিটামিন ই, ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড ও প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে চুলের গোড়াকে মজবুত করে। ঘরোয়া উপায়ে অর্গানিক হেয়ার অয়েলের উপকারিতা অর্গানিক তেল স্ক্যাল্পে গভীরভাবে প্রবেশ করে চুলের রুটে পুষ্টি যোগায়, যার ফলে চুল পড়া কমে যায় এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।

নারিকেল তেল, আমন্ড তেল, অলিভ তেল, বা ক্যাস্টর অয়েল এর মত প্রাকৃতিক তেলগুলো একসাথে মিশিয়ে ব্যবহার করলে আরো ভালো ফল পাওয়া যায়। এই তেল তুলে প্রাকৃতিক আর্দ্রতা বজায় রাখে এবং রুক্ষতা দূর করে। নিয়মিত ম্যাসাজের মাধ্যমে তেল স্ক্যাল্পের মৃত কোষ দূর করে ও নতুন চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। অনেকে রাতে ঘুমানোর আগে হালকা গরম তেল দিয়ে  ম্যাসাজ করে সকালে ধুয়ে ফেলেন, যা চুল পড়া রোধে খুব কার্যকর একটি পদ্ধতি।

অর্গানিক তেল এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হল এটি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক ও রাসায়নিক মুক্ত, তাই এতে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। বরং দীর্ঘ মেয়াদে এটি চুলের স্থায়িত্ব বাড়ায় এবং মাথার ত্বককে রাখে সতেজ ও সুস্থ। বাজারের কেমিক্যাল যুক্ত তেলের মত চুলের ক্ষতি না করে বরং চুলে প্রাকৃতিক পুষ্টি ফিরিয়ে আনে। তাই যদি তুমি চাও চুল পড়া বন্ধ হয়ে আবার ঘন, শক্ত ও উজ্জ্বল চুল ফিরিয়ে পেতে তবে ঘরোয়া অর্গানিক তেলি হতে পারে তোমার সেরা সমাধান।

চুলে অর্গানিক তেল ব্যবহারের সঠিক পদ্ধতি

চুলে অর্গানিক তেল ব্যবহারে সঠিক পদ্ধতি জানলে তেলের উপকারিতা অনেক গুণ বেড়ে যায়।ঘরোয়া উপায়ে অর্গানিক হেয়ার অয়েলের উপকারিতা নিম্নে চুলে অর্গানিক তেল ব্যবহারের সঠিক দশটি পদ্ধতি দেওয়া হলঃ

  • তেল হালকা গরম করে নাও- হালকা গরম তেল মাথার ত্বকে দ্রুত শোষিত হয় এবং চুলের গোড়ায় পুষ্টি পৌঁছায়।
  • আঙ্গুলের ডগা দিয়ে ম্যাসাজ করো- জোরে ঘষে নয়, বরং আলতোভাবে ৫-১০ মিনিট ঘূর্ণায়মান ভাবে ম্যাসাজ করলে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে।
  • চুল ভাগ করে তেল দাও-তেল দেওয়ার আগে চুল ভাগ করে নাও, এতে প্রতিটি অংশে সমানভাবে তেল পৌছাবে।
  • স্ক্যাল্পে ফোকাস কর-শুধু তুলে নয়, মাথার ত্বকের তেল লাগানো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এখান থেকেই চুলের পুষ্টি শুরু হয়।
  • তেল অন্তত ৩০ মিনিট রাখো-তেল কাজ করতে সময় নেয়, তাই ধোয়ার আগে অন্তত আধা ঘণ্টা অপেক্ষা করো চাইলে সারারাত ও রাখতে পারো।
  • তোয়ালে দিয়ে হালকা গরম ভাব দাও-তেল লাগানোর পর গরম পানিতে ভেজানো তোয়েলে চুলে জড়িয়ে রাখলে তেল আরো ভালোভাবে কাজ করে।
  • প্রাকৃতিক শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলো-রাসায়নিক শ্যাম্পু নয়, বরং মাইল্ড বা হারবাল শ্যাম্পু ব্যবহার করলে চুলে তেলের উপকার টিকে থাকে।
  • সপ্তাহের ২-৩ বার নিয়মিত করো-মাঝে মাঝে নয়, নিয়মিত ব্যবহারই চুলে স্থায়ী উজ্জ্বলতা ও শক্তি আনে।
  • তেলে প্রাকৃতিক উপাদান যোগ করো-নারিকেল তেল, অ্যালোভেরা, লেবুর রস বা কালোজিরা তেল মিশিয়ে নিলে ফলাফল আরো চমৎকার হয়।
  • চুল শুকানোর পর হালকা তেল ব্যবহার কর-ধোয়ার পর অল্প পরিমাণ তেল হাতের তালুতে নিয়ে চুলে লাগালে চুল হবে ঝলমলে ও ফ্রিজ-ফ্রি।

স্ক্যাল্পের যত্নে ঘরোয়া তেলের উপকারিতা

স্ক্যাল্প বা মাথার ত্বক চুলের মূল ভিত্তি। যদি স্ক্যাল্প সুস্থ থাকে, তবে চুল ও হবে ঘন, শক্ত ও ঝলমলে।ঘরোয়া উপায়ে অর্গানিক হেয়ার অয়েলের উপকারিতা ঘরোয়া অর্গানিক তেল স্ক্যাল্পের যত্নে এক অনন্য প্রাকৃতিক সমাধান। এতে থাকা ভিটামিন ই, ফেটি অ্যাসিড ও প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট স্ক্যাল্পে গভীরভাবে প্রবেশ করে পুষ্টি যোগায় এবং ত্বকের শুষ্কতা দূর করে। অর্গানিক তেল নিয়মিত ব্যবহার করলে মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে, যা নতুন চুল গজাতে সহায়তা করে এবং চুল পড়া কমায়।

তেলের প্রাকৃতিক উপাদান স্ক্যাল্পে জমে থাকা ময়লা, ধুলোবালি ও মৃত কোষ দূর করে মাথার ত্বককে রাখে পরিষ্কার ও সতেজ। এছাড়াও এতে থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ খুশকি ও ফাঙ্গাস ইনফেকশন প্রতিরোধ করে। অনেকেই নারিকেল তেলের সঙ্গে অ্যালোভেরা, লেবুর রস বা কালোজিরা তেল মিশিয়ে ব্যবহার করেন, যা স্ক্যাল্পেকে ঠান্ডা রাখে ও পুষ্টি যোগায়। তেল দিয়ে নিয়মিত ম্যাসাজ মানসিক প্রশান্তি এনে দেয়, ঘুম ভালো হয় এবং স্ট্রেস কমে-যা চুলের স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

সবচেয়ে ভালো দিক হলো, ঘরোয়া তেল ব্যবহারে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। বরং এটি স্ক্যাল্পেকে প্রাকৃতিকভাবে হাইড্রেট করে এবং চুলের শিকড় মজবুত রাখে। তাই স্ক্যাল্পের যত্ন নিতে চাইলে কেমিক্যাল নয়, ঘরোয়া অর্গানিক তেলই হতে পারে তোমার চুলের প্রকৃত বন্ধু।
ঘরোয়া-উপায়ে-অর্গানিক-হেয়ার-অয়েলের-উপকারিতা

অর্গানিক হেয়ার অয়েল তৈরি করতে কি উপকরণ লাগে

অর্গানিক হেয়ার অয়েল তৈরিতে প্রয়োজনীয় উপকরণ নিম্নে বর্ণনা করা হলোঃ
  • নারিকেল তেল-এটি চুলের গোড়া মজবুত করে,স্ক্যাল্পের শুষ্কতা দূর করে এবং প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা আনে।
  • আমলকি-চুল পড়া রোধ করে ও নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে, চুলের রং কালো রাখতে ও উপকারী।
  • ক্যাস্টর অয়েল-ঘন চুলের জন্য অসাধারণ, এতে থাকা রিসিনোলিক অ্যাসিড চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়।
  • অলিভ অয়েল-চুলে নরম ভাব আনে,স্ক্যাল্প পুষ্প রাখে ও ফ্রীজি চুল নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
  • মেথি দানা-খুশকি দূর করে, চুল ভেঙে যাওয়ার রোধ করে এবং চুলে প্রাকৃতিক মসৃণতা দেয়।
  • কারি পাতা-এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চুলের আগাম পাকা প্রতিরোধ করে ও চুলকে করে আরো মজবুত।
  • লেবুর রস-স্ক্যাল্পের অতিরিক্ত তেল ও খুশকি দূর করে, তেলকে সতেজ গন্ধ দেয়।
  • রোজমেরি অয়েল-চুলের বৃদ্ধি বাড়ায় ও চুল পড়া কমায়, এটি প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে ও কাজ করে।
  • অ্যালোভেরা জেল-চুলে ঠান্ডা অনুভূতি আনে, চুল পড়া রোধ করে ও চুলকে নরম করে।
  • ভৃঙ্গরাজ পাতা-আয়ুর্বেদিক ভাবে পরিচিত চুলের রাজা এটি চুলে পুষ্টি যোগায় ও আগাম টাক প্রতিরোধ করে।

খুশকি দূর করতে প্রাকৃতিক তেলের করণীয়

খুশকি এমন একটি সমস্যা যা চুলের সৌন্দর্য নষ্ট করে দেয় এবং আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দেয়। ঘরোয়া উপায়ে অর্গানিক হেয়ার অয়েলের উপকারিতা কিন্তু প্রাকৃতিক অর্গানিক তেল হতে পারে এর সবচেয়ে কার্যকর সমাধান। নারিকেল তেল, অলিভ তেল, লেবুর রস ও অ্যালোভেরার মিশ্রণ খুশকি দূর করতে আশ্চর্য কাজ করে। এই তেল স্ক্যাল্পের মৃত কোষ পরিষ্কার করে, শুষ্কতা কমায় এবং ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। 

সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার তেল হালকা গরম করে মাথায় ম্যাসাজ করলে রক্ত চলাচল বেড়ে যায়, ফলে ত্বকের পুষ্টি বৃদ্ধি পায়। অর্গানিক তেলে থাকা ভিটামিন ই ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট স্ক্যাল্পে আর্দ্রতা বজায় রাখে, যা খুশকি গঠনে বাধা দেয়।মেথিদানা ভিজিয়ে তেলের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করলে ফলাফল আরো দ্রুত পাওয়া যায়।

এটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিফাংগাস হিসেবে কাজ করে এবং চুলের গোড়া শক্ত করে। অনেকেই নারিকেল তেলের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে ব্যবহার করেন, যা খুশকির জীবাণু দূর করে স্ক্যাল্পেকে রাখে ঠান্ডা ও সতেজ। রাতে তেল লাগিয়ে সকালে হারবাল শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেললে খুশকি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসে।

 সবচেয়ে ভালো ফল পেতে নিয়মিত জরুরী-মাঝে মাঝে নয়, বরং ধারাবাহিকভাবে তেল ব্যবহার করতে হবে।এই প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই এবং এটি চুলের উজ্জ্বলতা ও ফিরিয়ে আনে। তাই খুশকি দূর করতে বাজারের কেমিক্যাল নয়, নিজের ঘরে তৈরি অর্গানিক তেলি হতে পারে তোমার চুলের সবচেয়ে নিরাপদ ও কার্যকর সমাধান।

যে সকল ফল খেলে চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি বাড়ে

চুলের প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা বজায় রাখতে শুধু বাহিক্য যত্নই নয়, অভ্যন্তরীণ পুষ্টি ও সমান গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কিছু নির্দিষ্ট ফল যুক্ত করলে চুল হয়ে উঠতে পারে আরো উজ্জ্বল মজবুত ও প্রাণবন্ত। 
  • আমলকি এমন একটি ফল যা ভিটামিন সি তে ভরপুর, এটি চুলের রং গাঢ় রাখে এবং আগাম পাকা প্রতিরোধ করে।
  • আপেল চুলের গোড়া শক্ত করে এবং স্ক্যাল্পে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে।
  • কলা চুলে প্রাকৃতিক মসৃণতা আনে, এর পটাশিয়াম ও প্রোটিন চুল ভেঙে যাওয়া রোধ করে।
  • কমলা ও লেবুর মত সাইট্রাস ফল তুলে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা আনে, কারণ এতে থাকা ভিটামিন সি কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায়।
  • পেঁপেতে থাকা এনজাইম চুলের রুক্ষতা কমায় ও স্ক্যাল্প পরিষ্কার রাখে।
  • তরমুজ ও আঙ্গুর শরীরে জলীয় ভারসাম্য বজায় রাখে, যা চুলে আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।
  • স্ট্রবেরি ও ব্লুবেরির মতো ফল অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর, এগুলোর চুলের ক্ষতি রোধ করে এবং উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।
এই ফলগুলো নিয়মিত খেলে শরীরের ভেতর থেকে চুল প্রায় প্রয়োজনীয় পুষ্টি, যা কোন কৃত্রিম পণ্যের সম্ভব নয়। তাই রাসায়নিক শ্যাম্পু নয়, বরং প্রতিদিনের প্লেটে রাখো এই প্রাকৃতিক ফল গুলো, তোমার চুল নিজেই জ্বলে উঠবে উজ্জ্বলতায় ও সৌন্দর্যে।

ঘরে তৈরি অর্গানিক তেল বানানোর সহজ উপায়

চুলের যত্নে সবচেয়ে নিরাপদ ও কার্যকর সমাধান হল ঘরে তৈরি অর্গানিক তেল। এতে কোন রাসায়নিক নেই, বরং প্রাকৃতিক উপাদানেই তৈরি হয় একদম খাঁটি ও পুষ্টিকর হেয়ার অয়েল। প্রথমে একটি পরিষ্কার পাত্রে এক কাপ নারিকেল তেল নাও এবং তাতে কিছুটা অলিভ অয়েল ও ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে নাও। এরপর এতে যোগ করো আমলকি, মেথি দানা ও কারি পাতা।

 চুলের বৃদ্ধির জন্য এগুলো দারুন কার্যকর। এখন মিশ্রণটি হালকা আচেঁ ১০-১৫ মিনিট গরম করো, যতক্ষণ না পাতাগুলো কুঁকড়ে যায় এবং তেলে হালকা সুবাস আসে। এরপর তেল ঠান্ডা হলে থেকে একটি কাঁচের বোতলে সংরক্ষণ করে রাখো। এই তেল সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করলে চুল পড়া কমে, চুল ঘন হয় এবং প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা ও ফিরে আসে।
ঘরোয়া-উপায়ে-অর্গানিক-হেয়ার-অয়েলের-উপকারিতা

তেলটি মাথার স্ক্যাল্পে হালকা হাতে ম্যাসাজ করলে রক্ত চলাচল বেড়ে যায়, ফলে চুলের গোড়া প্রায় পর্যাপ্ত পুষ্টি। সবচেয়ে ভালো ফল পেতে তেল লাগানোর পর মাথায় গরম তোয়ালে জোড়ে ৩০ মিনিট রাখলে উপকারিতা আরো বেড়ে যায়। ঘরে তৈরি এই অর্গানিক তেল সম্পূর্ণ নিরাপদ, সাশ্রয়ী এবং ফলাফল ও দীর্ঘস্থায়ী। তাই চুলের যত্নে কেমিক্যাল পণ্য নয়, নিজের হাতে বানানো এই প্রাকৃতিক তেলই হোক তোমার প্রতিদিনের সৌন্দর্যের গোপন রহস্য।

উপসংহার

প্রাকৃতিক উপায়ে চুলের যত্ন নেওয়া সবসময়ই সবচেয়ে নিরাপদ ও কার্যকর। ঘরে তৈরি অর্গানিক তেল শুধু চুল পড়া রোদই নয়, বরং চুলে আনে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা ও ঘনত্ব। নিয়মিত ব্যবহার করলে চুল হয় নরম, মসৃণ এবং প্রাণবন্ত। এতে কোন রাসায়নিক নেই, তাই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা ও নেই। এই প্রাকৃতিক তেলই হতে পারে সুন্দর, সুস্থ ও ঝলমলে চুলের আসল রহস্য। তাই আজ থেকেই শুরু করো নিজের হাতে বানানো অর্গানিক হেয়ার কেয়ার রুটিন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনার মূল্যবান মতামত এখানে টাইপ করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url